ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে এবার আরও স্পষ্ট অবস্থান নিল রাশিয়া। দেশটি জানিয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যের দীর্ঘস্থায়ী ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধানে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ ও কার্যকর পদক্ষেপ হতে পারে।
শুক্রবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আরটি-কে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেন, “রাশিয়া শুরু থেকেই দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের পক্ষে। আমরা ১৯৮৮ সালেই ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা ঘোষণাকে স্বীকৃতি দিয়েছিলাম।”
তিনি আরও বলেন, “এই সংকটের সমাধান তখনই সম্ভব, যখন জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবগুলো পুরোপুরি বাস্তবায়িত হবে। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের ভিত্তিতে ফিলিস্তিনিদের স্বাধীন রাষ্ট্রের অধিকার নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি।”
রাশিয়ার এই ঘোষণাটি এমন সময়ে এলো, যখন ইউরোপজুড়ে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার আন্দোলন নতুন গতি পেয়েছে। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ সম্প্রতি ঘোষণা দিয়েছেন, আসন্ন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে (সেপ্টেম্বর ২০২৫) ফ্রান্স আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে।
এছাড়া যুক্তরাজ্যেও এই ইস্যুতে রাজনৈতিক চাপ বাড়ছে। দেশটির প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টিসহ ৯টি রাজনৈতিক দলের ২২০ জন এমপি ব্রিটিশ সরকারকে আহ্বান জানিয়েছেন ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে। এই সংখ্যাটি ব্রিটিশ পার্লামেন্টের এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি।
সাংসদদের মতে, যুক্তরাজ্যের স্বীকৃতি বিশ্বকে একটি “শক্তিশালী বার্তা” দেবে এবং বহু প্রতীক্ষিত দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের পথকে আরও এগিয়ে নেবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি নিয়ে উদ্ভূত এই নতুন তরঙ্গ শুধু কূটনৈতিক পর্যায়ে নয়, বরং পুরো মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক ভারসাম্যে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে। তবে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে—এই স্বীকৃতিগুলোর বাস্তব প্রভাব কতটা কার্যকর হবে এবং তা দীর্ঘদিনের সংঘাতের অবসানে কতটা ভূমিকা রাখতে পারবে।
প্রতিবেদক: South America Bangla News
তারিখ: ২৬ জুলাই ২০২৫
0 মন্তব্যসমূহ