Header Ads Widget

Responsive Advertisement

গাজা সংকটে আন্তর্জাতিক নীরবতায় তীব্র নিন্দা জাতিসংঘ মহাসচিবের



বিশ্ব সংবাদ, দক্ষিণ আমেরিকা ডিজিটাল ডেস্ক :নিউইয়র্ক:

গাজা উপত্যকায় চলমান মানবিক বিপর্যয় ও ভয়াবহ ক্ষুধা পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নীরবতা এবং নিষ্ক্রিয়তায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। তিনি এই নীরবতাকে ‘বিশ্ব বিবেকের জন্য এক গভীর নৈতিক সংকট’ বলে অভিহিত করেছেন।

শুক্রবার অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের একটি বৈশ্বিক সম্মেলনে দেওয়া ভিডিও বার্তায় মহাসচিব বলেন, “আমি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অন্ধ উদাসীনতা, নিস্ক্রিয়তা এবং সহানুভূতির অভাবের কোনো ব্যাখ্যা খুঁজে পাই না। এটি কেবল একটি মানবিক বিপর্যয় নয়, এটি এক ভয়াবহ নৈতিক সংকট।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা প্রতিটি সুযোগে আমাদের আওয়াজ তুলব। সত্য, সহানুভূতি এবং মানবিকতার পক্ষে কথা বলব।”

গুতেরেসের বক্তব্যের প্রেক্ষাপটে গাজায় চলমান যুদ্ধ, খাদ্য অবরোধ ও ক্রমবর্ধমান অপুষ্টির চিত্র তুলে ধরেছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা। চলতি বছরের মার্চে গাজায় ত্রাণ প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করে ইসরায়েল, যা পরবর্তীতে আংশিক শিথিল হলেও বাস্তব পরিস্থিতির তেমন উন্নতি হয়নি। শিশুদের মধ্যে অপুষ্টির হার উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে বলে জানানো হয়েছে।

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সমর্থনে গঠিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) গাজায় ত্রাণ সহায়তা নিয়ন্ত্রণ করছে। এটি জাতিসংঘের নেতৃত্বাধীন দীর্ঘস্থায়ী মানবিক বিতরণ ব্যবস্থায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এনেছে। তবে অনেক সাহায্য সংস্থা ও জাতিসংঘ নিজেই এই সংস্থার সঙ্গে কাজ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে, কারণ তারা মনে করে জিএইচএফ ইসরায়েলি সামরিক লক্ষ্য পূরণে ব্যবহৃত হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটির (আইসিআরসি) প্রেসিডেন্ট মিরজানা স্পোলজারিক এক বিবৃতিতে বলেন, “গাজায় যা ঘটছে, তার কোনো অজুহাত নেই। মানবিক কষ্ট ও মর্যাদাহানির মাত্রা বহু আগেই সব আইন ও নৈতিক সীমা অতিক্রম করেছে।” তিনি জানান, গাজায় আইসিআরসির ৩৫০ জনের বেশি কর্মী রয়েছেন, যাদের অনেকেই খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির অভাবে ভুগছেন।

জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেস আরও বলেন, “২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার নিন্দা আমি বারবার জানিয়েছি। তবে এরপর যে মাত্রায় মৃত্যু, ধ্বংস ও মানবিক বিপর্যয় চলছে, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।”

তিনি মানবিক বাস্তবতার হৃদয়বিদারক চিত্র তুলে ধরে বলেন, “শিশুরা বলছে, তারা স্বর্গে যেতে চায়, কারণ সেখানে অন্তত খাবার আছে। ভিডিও কলে আমরা আমাদের কর্মীদের দেখি, যারা অনাহারে ভুগছে। কিন্তু শুধু নীতিবাক্য দিয়ে শিশুদের পেট ভরানো যায় না।”

গত ২৭ মে থেকে জিএইচএফ চালু হওয়ার পর খাদ্য সহায়তা নিতে গিয়ে ১,০০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানা গেছে। এ ঘটনারও কড়া নিন্দা জানান গুতেরেস।

শেষে তিনি বলেন, “এই পরিস্থিতিতে অবিলম্বে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি, নিঃশর্তভাবে সব জিম্মির মুক্তি এবং বাধাহীন মানবিক সহায়তার প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। যদি ইসরায়েল ও হামাস যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়, জাতিসংঘ গাজায় মানবিক কার্যক্রম দ্রুত ও ব্যাপকভাবে সম্প্রসারণে প্রস্তুত রয়েছে।”


প্রতিবেদক: South America Bangla News
তারিখ: ২৬ জুলাই ২০২৫

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ