Header Ads Widget

Responsive Advertisement

ব্রাজিলে লুলার বিরুদ্ধে ইহুদিবাদী ও ডানপন্থীদের রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র জোরালো, ডেভিডের ভূমিকায় রাষ্ট্রপতি



বিশ্ব সংবাদ, দক্ষিণ আমেরিকা ডিজিটাল ডেস্ক :
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

ব্রাজিলে ২০২৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগাম লড়াই শুরু হয়ে গেছে। পুনঃনির্বাচনের পথে লুলার সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ডানপন্থী বিরোধী জোট এবং আন্তর্জাতিক ইহুদিবাদী চাপ। চলমান পরিস্থিতিতে নিজেকে ডেভিডের ভূমিকায় দেখতে হচ্ছে প্রেসিডেন্ট লুলাকে।

১৬ নভেম্বর, সরকার কর্তৃক আর্থিক লেনদেন কর (IOF) বাড়ানোর প্রস্তাব কংগ্রেসে ৩৪৬-৯৭ ভোটে প্রত্যাখ্যাত হয়। পরদিনই INSS দুর্নীতির তদন্তে পার্লামেন্টারি কমিশন (CPI) গঠনের প্রস্তাবও গৃহীত হয়। এতে গভীর রাজনৈতিক সংকটে পড়েছে লুলার সরকার।

সরকারি জোট বারবার পার্লামেন্টে সংখ্যালঘু অবস্থানে পড়ছে। বিরোধী ডানপন্থী, অতিডানপন্থী জোট এবং প্রভাবশালী জায়নিস্ট লবির প্রভাব এই সংকটকে আরও ঘনীভূত করেছে। মিডিয়া, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চাপ, ব্ল্যাকমেইল এবং বিশ্বাসঘাতকতাও সরকারের পক্ষে পরিস্থিতি কঠিন করে তুলছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমান INSS দুর্নীতির উৎস বলসোনারোর আমল থেকেই, তবে বিরোধীরা তা লুলার সরকারের ওপর চাপানোর চেষ্টা করছে। ইতিমধ্যেই সিনেটে পিটিএ দলের নেতা জ্যাক ওয়াগনারসহ একাধিক প্রভাবশালী নেতা ইসরায়েলের স্বার্থে লুলার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। এমনকি দেশের বেশ কিছু শহরের মেয়রও ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে গণহত্যা সমর্থনে একত্রিত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ অবস্থায়, সরকারি শক্তিকে বাঁচাতে লুলার একমাত্র ভরসা জনসমর্থন এবং রাস্তায় গণআন্দোলন। তবে সরকারি দল পিটিএ বর্তমানে সাংগঠনিক দুর্বলতায় ভুগছে। এক সময়ের বৃহত্তম শ্রমিক দল পিটিএ নব্য-উদারনৈতিক চাপে আত্মসমর্পণ করে রাজনৈতিকভাবে অচল হয়ে পড়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমানে জাতীয় পুঁজিপতিদের অংশ ইহুদিবাদী স্বার্থের সঙ্গে জোট বেঁধে লুলার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। দেশটির প্রকৃত অর্থনীতি সংকটের মুখে, যেখানে ৪.৫% মুদ্রাস্ফীতির বিপরীতে ১৪.৭৫% সুদের হার আর্থিক ফাটকাবাজদের বছরে ৭% মুনাফা নিশ্চিত করছে।

এমন সময়ে, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে লুলা জায়নিস্ট আগ্রাসন এবং ইসরায়েলের যুদ্ধাপরাধের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে সাহসিকতা দেখিয়েছেন। সম্প্রতি কানাডায় জি৭ সম্মেলনে তিনি ইসরায়েল-ইরান সংঘাতের ইস্যুতে স্পষ্ট অবস্থান নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েন।

বর্তমানে ব্রাজিলের অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে লুলা কার্যত ডেভিডের ভূমিকায়। ইসরায়েল-মার্কিন প্রভাব এবং দেশের ডানপন্থী-ইহুদিবাদী লবির গোলিয়াথ শক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তার অবস্থান দিন দিন কঠিন হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিস্থিতি মোকাবেলায় লুলা এবং পিটিএ-র জরুরি ভিত্তিতে একুশ শতকের রাজনৈতিক বাস্তবতা অনুযায়ী সংগঠন পুনর্গঠন এবং বৃহত্তর আন্তর্জাতিক গণআন্দোলনের প্রয়োজন। ফিলিস্তিন, ইরানসহ সাম্রাজ্যবাদবিরোধী বিশ্বজনমতকেও পাশে টেনে নিতে হবে।

এ প্রশ্নও সামনে এসেছে, লাতিন আমেরিকা কি এই লড়াইয়ে লুলার পাশে থাকবে? ২০২৬-এর নির্বাচন পর্যন্ত উত্তেজনা ক্রমেই বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ