ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওই মুখপাত্র ই–মেইলে প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, আলোচনার জন্য নতুন কোনো তারিখ এখনো নির্ধারণ করা হয়নি।
অংশীদারত্ব ও সহযোগিতা চুক্তির আওতায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন একটি দেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা দিয়ে থাকে।
বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক আরও সম্প্রসারণ ও বিকাশের লক্ষ্যে গত বছরের ২৫ অক্টোবর নতুন ইইউ–বাংলাদেশ অংশীদারত্ব ও সহযোগিতা চুক্তির বিষয়ে আলোচনা শুরুর সিদ্ধান্ত হয়। ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত ওই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লিয়েন উপস্থিত ছিলেন।
ওই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্পে ৪০ কোটি ইউরো অর্থায়নের লক্ষ্যে ইউরোপীয় বিনিয়োগ ব্যাংক ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে একটি চুক্তি সই হয়। বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব হ্রাসের লক্ষ্যসমূহ অর্জন ও দেশের বিদ্যুৎ খাতের পরিবেশসম্মত টেকসই রূপান্তরের জন্য এই অর্থ খরচ করার কথা।
এ ছাড়া আরও পাঁচটি ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাবদ সাত কোটি ইউরোর চুক্তিও সই করা হয়। এ পাঁচটি ক্ষেত্র হলো শিক্ষা, শোভন কাজ, পরিবেশসম্মত নির্মাণশিল্প, ই–গভর্ন্যান্স ও জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা রোধ।
নতুন অংশীদারত্ব ও সহযোগিতা চুক্তি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রথম দফার আলোচনা স্থগিত করার এ সিদ্ধান্ত এসেছে সাম্প্রতিক কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঘটা সহিংস ঘটনার প্রতি ইইউর সাড়া হিসেবে। ইইউর মুখপাত্র বলেছেন, ‘বিরাজমান পরিস্থিতির আলোকে’ আলোচনা স্থগিত করা হয়েছে।
বাংলাদেশের চলতি ঘটনাবলি ও এ বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অবস্থান সম্পর্কে ওই মুখপাত্র বলেন যে সংস্থাটির বৈদেশিক ও নিরাপত্তা নীতিবিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল এ বিষয়ে গতকাল একটি বিবৃতি দিয়েছেন।
ওই বিবৃতিতে জোসেপ বোরেল বলেন, বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে ‘দেখামাত্র গুলির নির্দেশ’ দেওয়া ও আইনবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি জানান, ২৭ জুলাই লাওসে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ানের আঞ্চলিক ফোরামের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের ফাঁকে তিনি বাংলাদেশের প্রতিনিধি সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের কাছে এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
ইইউর বৈদেশিক নীতিবিষয়ক প্রধান আরও বলেন, ‘এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের হত্যা, সহিংসতা, নির্যাতন, গণগ্রেপ্তার ও সম্পদের যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা নিয়েও আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। অবশ্যই এসব কর্মকাণ্ডের পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত ও দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।’
জোসেপ বোরেল বলেন, এ সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ কী পদক্ষেপ গ্রহণ করে, সেদিকে তাঁরা গভীর নজর রাখবেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন-বাংলাদেশ সম্পর্কের মূলনীতিগুলো বিবেচনায় রেখে তাঁরা আশা করছেন, বাংলাদেশে সব ধরনের মানবাধিকারের প্রতি পূর্ণ সম্মান জানানো হবে।
সূত্র - প্রথম আলো
0 মন্তব্যসমূহ